বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বরগুনা, বরিশাল ও আশপাশের জেলাগুলোতে গত এক সপ্তাহে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে বরগুনা জেলাতেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৭০০ জনের বেশি, যা ওই অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যা ২০২৫ সালের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায়। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে অতিবৃষ্টির ফলে জমে থাকা পানিতে মশার প্রজনন দ্রুত বাড়ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. রত্না দাস জানান, অনেক এলাকায় টিউবওয়েল ও পাত্রে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব স্বাভাবিকের তুলনায় ৮ গুণ বেশি পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ফগিং বা কীটনাশক স্প্রে করে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো, স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঠে সক্রিয় করা এবং আক্রান্ত এলাকায় লার্ভা ধ্বংস কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় শয্যা ও চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
সরকারি পর্যায় থেকে এখনো পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ে কোনো উচ্চমাত্রার সতর্কতা জারি না হলেও, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন—প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে দেরি হলে সামনে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।