আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগের মত আর বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তারা জানিয়েছে, যেসব বিদেশি সংস্থা বা প্রতিনিধি বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিতর্কিত নির্বাচনকে বৈধতা দিয়েছে, এবার তাদের আর বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া হবে না।
ইসি সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, যেসব সংস্থা ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, এবং পরবর্তীতে সেই নির্বাচনগুলোর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে—তাদের বিষয়ে এখন থেকে নতুনভাবে ভাবছে কমিশন। নির্বাচন কমিশনের মতে, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের একটা অংশ অতীতে দায়িত্ব পালনের নামে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে এবং দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি আন্তর্জাতিকভাবে বিভ্রান্তিকর বার্তা দিয়েছে।
ইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এবার আমরা পর্যবেক্ষকদের বাছাইয়ে আরও কঠোর হব। যারা সত্যিকারের নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করতে চায়, তাদেরকেই কেবল আমরা আমন্ত্রণ জানাব। শুধুমাত্র আগ্রহ প্রকাশ করলেই আমরা অনুমতি দেব না।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে যারা অতীতে অবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি করেছে, তাদের এবার আসার দরকার নেই। জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।”
নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এমন কঠোর অবস্থান বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ একাধিকবার বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করেছে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের নামে কিছু পক্ষকালীন শক্তি নির্বাচনী অনিয়মকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
সব মিলিয়ে এবার নির্বাচন কমিশন যে শুধুমাত্র ‘পর্যবেক্ষক পাঠানো’ নয়, বরং কারা পাঠাচ্ছে, কী উদ্দেশ্যে পাঠাচ্ছে—তা গভীরভাবে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে, তা-ই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

