বিশ্বব্যাপী উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু—এমন খবরে কূটনৈতিক মহলে হাস্যরস আর বিস্ময়ের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের নৈশভোজে নেতানিয়াহু যখন ট্রাম্পের হাতে “শান্তির নোবেল” সুপারিশপত্র তুলে দেন, তখন কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন—শান্তির পুরস্কার না কি ‘যুদ্ধের ওয়্যারেন্টি’ দেওয়া হচ্ছে?
গাজায় আগুন জ্বলছে, লেবাননে বোমার শব্দ থামছে না, আর ঠিক তখনই এক গরম কফির টেবিলে ‘শান্তির প্রতীক’ বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে এমন এক নেতাকে, যার সময়েই শুরু হয়েছিল অসংখ্য সংঘর্ষের সূত্রপাত।
নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে “বিশ্বশান্তির রূপকার” বললেও বাস্তবে তাঁর প্রশাসনের সময়েই গাজা, সিরিয়া, ইরানসহ একাধিক অঞ্চলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল। Abraham Accords–এ ইসরায়েল কিছু আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করলেও, ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা কমেনি একবিন্দুও। বরং অনেক বিশ্লেষকের মতে, এই চুক্তির নামেই শুরু হয়েছিল নতুন বিভাজনের রাজনীতি।
ট্রাম্প, যিনি একসময় নিজেকে “War President” বলতেই গর্ব করতেন, তিনিই এখন নোবেল পাওয়ার আশায় বেজে উঠেছেন নেতানিয়াহুর প্রশংসার বাঁশিতে।
একজন যুদ্ধের কুশলী, অন্যজন যুদ্ধ থেকে ‘শান্তি’ বানানোর কারিগর—দুজনেই যেন একে অপরকে পুরস্কার দিচ্ছেন নিজেদের ভূমিকা ‘গ্লোরিফাই’ করার জন্য।
বিশ্ববাসী এই মনোনয়নকে দেখছে এক ধরনের প্রহসন হিসেবে। “যদি শান্তির নোবেল এমন লোকদের দেয়া হয়, তবে যুদ্ধের নোবেল কাদের প্রাপ্য?”—এই প্রশ্ন এখন উঠছে নানা মহলে।
রাজনীতি যখন কূটনৈতিক সম্মানকে ব্যক্তিগত প্রচারের হাতিয়ার বানায়, তখন শান্তির অর্থ আর শব্দেই সীমাবদ্ধ থাকে না—তা হয়ে যায় ক্ষমতার এক নীরব বিজ্ঞাপন। আর ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর এই যৌথ প্রচেষ্টা যেন তারই জীবন্ত উদাহরণ।

