তবলীগের দুই পক্ষই সহীহ ; হানাফী শাফেয়ী দুই মাযহাবের মত
শায়খুল ইসলাম মুফতী ত্বকী উসমানী দা.বা.
(৬/১০/২০২৪ মদীনা মুনাওয়ারা থেকে)
অদ্য ৬ই অক্টোবর রোজ রবিবার মদীনা মুনাওয়ারায় শায়খুল ইসলাম মুফতী ত্বকী উসমানী ও তাবলীগ জামাতের আমীর হযরতজী মাওলানা মোহাম্মদ সা’দ কান্ধলভী দা.বা. এর মোলাকাত হয়। একান্ত আলাপচারিতায় শেষে হযরতজী ও তার ছাহেবজাদাগন শায়খুল ইসলামকে কিছু নসিহত করতে বলেন।
তখন শায়খুল ইসলাম মুফতী তকী উসমানী দা.বা. বলেন,
আল্লাহ পাকের ফজল ও করমে এই কাজের লাভ, কার্যকারিতা খুবই সুস্পষ্ট, যা আজ দৃশ্যমান। আল্লাহ পাকের রহমতে এই কাজ মাকবুল।শুধু এতটুকু কথা যে সহীহ এলমের সাথে যেন এই কাজ চলে। কিছু বিষয়ে সীমা অতিক্রমতো রয়েছ,যেটার সংশোধন খোলা দিলে মেনে নেওয়া উচিত। যেহেতু এই কাজ আল্লাহর।তাই কেউ কোন বিষয়ে ভুল ধরিয়ে দিলে তাকে মুহসিন বা হিতাকাঙ্খী মনে করা উচিত। তাকে নিজের বিরোধী মনে করবেন না। আমি সারা পৃথিবীতেই এটা বলি যে এই কাজের দ্বারা সারা দুনিয়ায় যে খেদমত হয়েছে তা অন্য কোন জামাতের দ্বারা হয়নি।
এটা হযরত মাওলানা ইলিয়াস রহমতুল্লাহি আলাইহি এর দিলের জ্বলন বা ব্যথার প্রতিফল ছিল, যার ফলে এ কাজ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে গেছে। তাঁর এই দিলের জ্বলন কোন নাম যশের জন্য ছিল না। এবং কোন পদ বা পদবীর জন্যও ছিল না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দিলে ওই ব্যথা বা জ্বলন বাকি থাকবে এই কাজ তারাক্কি করতে থাকবে। খোদা না করেন, যদি এই জ্বলন বা ব্যথার মধ্যে মাসলা এসে যায়। এখলাসের মধ্যে কোনো কমি এসে যায়। পদ পদবী এবং পরিচালনাগত বিষয়ে খারাবী এসে যায় তখন এই কাজের মধ্যে নোকসান আসবে।
তিনি আরো বলেন,
এটা আমি সব জায়গায় বলি যে আজ এই জামাত দুই ভাগ হয়েছে। যেমন ধরুন দুইটি মাযহাবের মত হয়ে গেছে। এটা তাদেরকেও বলি, আপনাদেরকেও বলি। যেটাকে স্বীকার করে নিতে হবে। যার মন চায় ওদিকে যাবে আর যার মন চায় এদিকে আসবে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই কাজ ছাড়া যাবেনা। আর কোনো একদলকে পরিপূর্ণ সহীহ,আরেকদলকে পরিপূর্ণ বাতিল বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কিন্তু ঝগড়া বিবাদ পরিহার করতে হবে। আজতো ইংল্যান্ড আরো কতো জায়গায় ঝগড়া হচ্ছে, তাও মসজিদের ভিতরে। তাহলে দোয়া কিভাবে আসবে আর বরকত কিভাবে হবে? যে ওইভাবে করতে চাচ্ছে তাকপ সেভাবেই করতে দিন। আর যে এইভাবে করতে চাচ্ছে তাকে এভাবে করতে দিন। সবাই আল্লাহর জন্যই করছে। দুইটা বিষয়কে পরিত্যাগ করে চলতে হবে ১/ বদ জবানী( মুখের ভাষা খারাপ করা) ২/ বদ গুমানি( অন্যের ব্যাপারে খারাপ ধারণা পোষণ করা)
এই দুই জিনিস থেকে পরহেজ করতে হবে। কোনো বিষয় সংশোধনযোগ্য বলে মনে হলে সেটাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
শায়খুল ইসলাম বলেন,
এভাবে করতে থাকলে হযরত মাওলানা ইলিয়াস রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর দিলে যে জ্বলন ছিল তা কখনো নির্বাপিত হবেনা । আর যদি নিভে যায় তা আমাদের হরকতের কারণে নিভে যাবে। আল্লাহ পাক হেফাজত ফরমান, আমীন।এটা হযরতের ইখলাসের বরকতে চলছে যেমনটা আপনি তাঁর ঘটনায় জানালেন। এ কাজ কোনো এক ব্যক্তির কারণে চলছে না। এটা হযরতের ত্যাগের কারণে চলছে। এটাকে সঠিকভাবে ধরে রাখা উচিত। এটাকে এভাবে মনে করুন, যে কাজ হচ্ছে তা আল্লাহর জন্যই হচ্ছে। তখন কেউ গালি দিলেও তা গায়ে লাগবে না। নবীদেরকে বলা হতো তোমাকে তো আমাদের কাছে বেওকুফ এবং মিথ্যাবাদী মনে হচ্ছে। আর এখন কোন বিতার্কিক বা দায়ীকে কেউ যদি মজলিসে বলে যে তুমি মিথ্যাবাদী বা বেওকুফ,সে বলে দিবে, বরং তুমি মিথ্যাবাদী এবং তোমার বাবাও মিথ্যাবাদী। আর পয়গম্বর কী বলতেন, “হে আমার জাতি, আমার মধ্যে কোনো নির্বুদ্ধিতা নেই বরং আমিতো বিশ্ব অধিপতির পক্ষ থেকে একজন রাসুল”। এটাকে আপন করে চললে একসময় এই এখতেলাফও খতম হয়ে যাবে। আর খুব বরকতও হবে ইনশাআল্লাহ।
মুফতী ত্বকী উসমানী আরে বলেন,
এটা মনে করে চলুন যে আপনারা দুই মাজহাবের মত হয়ে গেছেন,একদল শাফেয়ী তো আরেকদল হানাফী। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করে যে, কোন দলটা উত্তম। আমি বলি যে ধরো দুইটি মাজহাব হয়ে গেছে। শাফেয়ী ভালো লাগলে শাফেয়ী আর তুমি হানাফি পথ ধরলে হলে হানাফী!(যেকোনো দিকে তুমি যেতে পারো)
পরিশেষে হযরতজি ও তার সাহেবজাদাগন মুফতী ত্বকী ওসমানীকে দা. বা. আশ্বস্ত করে বলেন, আপনি যে বিষয়টি বলেছেন আমরা মারকাজে হেদায়েতের কথায় এই কথাগুলো সবসময় বলি যে, কোন মসজিদ থেকে যদি কেউ তোমাদের সামানাও বের করে দেয় তাহলে অন্য মসজিদে গিয়ে কাজ করো।কোন প্রয়োজন নেই যে এই মসজিদেই ঢুকতে হবে।
আল্লাহ সবাইকে বোঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন,আমীন